Business is booming.
শীর্ষ সংবাদ
বাংলাদেশ জুয়েলারী সমিতির অকার্যকর কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগের দাবিকুমিল্লায় বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জনবন্যা পরিস্থিতি উন্নতির সম্ভাবনাঢাকার বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীরা, শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাতা ও ক্যাপ বিতরন করলো রিয়েল ক্যাপিটা গ্রুপ।১ লাখ সিমধারী ঢাকায় প্রবেশ করেছিল ঃজুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীগণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল ‘শ্রীলঙ্কা স্টাইলে’কারফিউ না দিলেবিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে : কাদেরলজ্জা হয় না নিজেদের রাজাকার বলতে : প্রধানমন্ত্রীঅবরোধ শিক্ষার্থীদের রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ঃ কোটা আন্দোলনবিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ওপরে কুড়িগ্রামে ২০ স্থানে ভাঙন, ব্রহ্মপুত্রের পানি

কাতার বিশ্বকাপে মৃত বাংলাদেশি শ্রমিকদের তালিকা চান হাইকোর্ট

19

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনে বিভিন্ন স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছে আয়োজক দেশ কাতার। প্রায় ১২ বছর ধরে এসব ইমারত নির্মাণে কাজ করছেন বিভিন্ন দেশ থেকে কাতারে আসা শ্রমিকরা। এসব অবকাঠামো নির্মাণকালে অনেক শ্রমিক আহত হয়েছেন। কেউ কেউ আবার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণও হারিয়েছেন।

কাতার বিশ্বকাপ স্টেডিয়াম তৈরিতে কর্মরত নিহত ও আহত বাংলাদেশি এসব শ্রমিকদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) নিহত-আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ কেন নয় বলে ফিফার প্রতি রুল জারি করে বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের দ্বৈত বেঞ্চ।

আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব, বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব, কাতার দূতাবাস, আইএলও, ফিফাসহ ৮ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে কেন্দ্র করে মানবেতর পরিস্থিতিতে কাজ করতে গিয়ে সাড়ে চারশো শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাসুদ আর. সোবহান জনস্বার্থে গত ১৩ ডিসেম্বর এ রিট দায়ের করেন।

রিটে পররাষ্ট্র সচিব, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনশক্তি রপ্তানি ব্যুরো, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল এসোসিয়েশন (ফিফা), কাতারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কাতারের শ্রমমন্ত্রীকে বিবাদী করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাতার বিশ্বকাপে শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন রিট আবেদনে সংযুক্ত করা হয়েছে। রোববার (৮ জানুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট আবেদনটির শুনানি এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেছেন।

ইংলিশ পত্রিকা গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১০ বছর আগে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পাওয়ার পর এর প্রস্তুতিতে সেখানে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি দক্ষিণ এশিয়ান শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বকাপ আয়োজনের গৌরব অর্জনের পর থেকে কাতারে প্রতি সপ্তাহে গড়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

পাকিস্তান বাদে ৪টি দেশে গার্ডিয়ানের নির্ভরযোগ্য সূত্র ও দেশগুলোর সরকারি হিসাবই বলছে- ২০১১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ৫ হাজার ৯২৭ জন প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মৃত বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ১ হাজার ১৮। কাতারে পাকিস্তানের দূতাবাস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে ৮২৪ জন পাকিস্তানি শ্রমিক মারা গেছেন মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশে। ২০২০–এর শেষভাগের তথ্য এ হিসাবে নেই। কাতারে শ্রমিক সরবরাহে অনেক এগিয়ে থাকা ফিলিপাইন ও কেনিয়ার নাগরিকদের মৃতের সংখ্যা অবশ্য জানা যায়নি। সে কারণেই কাতারে প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর সঠিক সংখ্যাটি আরও অনেক বড় বলেই সন্দেহ গার্ডিয়ানের।

গত ১০ বছরে বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য অভাবনীয় সব প্রকল্প হাতে নেয় কাতার। সাতটা নতুন স্টেডিয়াম বানানো হয়। এর সঙ্গে আরও অনেকগুলো বড় বড় প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে দেশটি। নতুন একটি বিমানবন্দরসহ নতুন রাস্তাঘাট ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। এত বড় বড় সব স্থাপনা ও উন্নয়নকাজের জন্য অসংখ্য কর্মশক্তির দরকার হয়েছে দেশটির।

মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করে ফেয়ার স্কোয়ার প্রজেক্টস। এর পরিচালক নিক ম্যাকগিহান বিশ্বকাপের প্রকল্পের সঙ্গে প্রবাসী শ্রমিকদের মৃত্যুর সম্পর্কটা এভাবেই দেখালেন, ‘২০১১ সাল থেকে কাতারে যেসব প্রবাসী শ্রমিক মারা গেছেন, তাদের অধিকাংশই কাতার বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পাওয়ার পর সেখানে গেছেন।’ বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম বানানোর কাজ করছেন এমন অবস্থাতেই ৩৭ জন শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেছেন। যদিও বিশ্বকাপ আয়োজন কমিটি এর মধ্যে ৩৪ জনের মৃত্যুকেই কাজের বাইরের ঘটনায় মৃত্যু বলে চালিয়ে দিয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা এসব দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

স্টেডিয়ামের জায়গায় কাজ করতে করতেই মৃত্যুবরণ করেছেন কিছু শ্রমিক, এমন ঘটনাও ঘটেছে বেশ কিছু। গত ১০ বছরে যত মৃত্যু হয়েছে, তার অধিকাংশকেই স্বাভাবিক মৃত্যু বলে দাবি করেছে কাতার। গার্ডিয়ান যে তথ্য পেয়েছে, সে অনুযায়ী বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের যতজন মারা গেছেন, তার ৬৯ ভাগকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলা হয়েছে। ১২ ভাগের মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনায়। শুধু ৭ ভাগের মৃত্যুর সঙ্গে কাজের পরিবেশ জড়িত। আর ৭ ভাগ কর্মী আত্মহত্যা করেছেন। ভারতীয়দের ক্ষেত্রে ৮০ ভাগই নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু।

সিএনএন- এর প্রতিবেদনে বলা হয়, কাতারে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ পাওয়াদের অধিকাংশই মানবেতর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কাজ করেছেন। বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে আয়োজক দেশ কাতার।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.