Business is booming.

গাজীপুরের ৫ আসনেই থাকছে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী - গাজীপুর

128

গাজীপুরের পাঁচটি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আবেদন করেছিল মোট ২৬ জন। এর মধ্যে চার আসনে বর্তমান সংসদ সদস্যদের রেখে একটি আসনে নতুন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। তবে মনোনয়ন না পেলেও পাঁচটি আসন থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত একাধিক প্রার্থী স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহও করেছেন কেউ কেউ।

Google News গুগল নিউজে প্রতিদিনের বাংলাদেশ”র খবর পড়তে ফলো করুন

জেলার পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ারা হলেন—গাজীপুর-১ (কালিয়াকৈর ও সিটির একাংশ) আসনে আ ক ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর-২ (গাজীপুর সদর ও টঙ্গী) জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর-৩ (শ্রীপুর ও সদর একাংশ) রুমানা আলি টুসি, গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) সিমিন হোসেন রিমি, গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ ও সদর একাংশ) আসনে মেহের আফরোজ চুমকি।

এদের মধ্যে শুধু গাজীপুর-৩ (শ্রীপুর) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান সবুজের পরিবর্তে মনোনয়ন পেয়েছেন রুমানা আলি টুসি।

১, ২ ও ৫ নম্বর আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী কয়েকজন নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। ৩ ও ৪ নম্বর আসনের প্রার্থীরাও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রার্থিতা ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন
নির্বাচনের পরে হবে বই উৎসব

জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে আওয়ামী লীগের আগ্রহী প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারবেন বলে দলের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত রয়েছে।

গাজীপুর-১

গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিল পাঁচজন। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককেই মনোনয়ন দিয়েছে দলটি।

আরও পড়ুন
তারেক রহমানকে যারা মানতে পারছেন না তারাই নির্বাচনে প্রার্থী হবেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল, কালিয়াকৈর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন শিকদার ও ব্যবসায়ী নুরে আলম সিদ্দিকী।

দলের মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন রেজাউল করিম রাসেলসহ কয়েকজন।

রেজাউল করিম রাসেল বলেন, ’দল থেকে একজনকে মনোনয়ন দিয়েছে। তবে দলের সিদ্ধান্ত রয়েছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত না হয়। আমি যেহেতু তৃণমূলের নেতাকর্মী নিয়ে সব সময় কাজ করি, জনগণ নির্বাচনের জন্য বলছে, আমি নির্বাচন করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

গাজীপুর-২

গাজীপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিল পাঁচজন। এই আসনে নৌকার টিকিট পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। তিনি শ্রমিক নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে। পিতার মৃত্যুর পর চারবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

এ ছাড়াও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টঙ্গী পৌরসভার সাবেক মেয়র অ্যাড. আজমত উল্লা খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য মোস্তাফা হুমায়ুন হিমু, গাজীপুর সিটির মেয়র প্রার্থী মেজবাহ উদ্দিন রুবেল মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ’আমি দল থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম, পাইনি। যেহেতু সুযোগ রয়েছে, তাই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

গাজীপুর-৩

গাজীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিল ছয়জন। এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজের পরিবর্তে সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাড. রহমত আলীর মেয়ে সংরক্ষিত আসন-৩১৪ সংসদ সদস্য রুমানা আলী মনোনয়ন পেয়েছেন।

এ ছাড়াও শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামিল হাসান দুর্জয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

গাজীপুর-৪

গাজীপুর-৪ আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের মেয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের উপদেষ্টা আলম আহমেদ। দল নৌকা তুলে দিয়েছেন সিমিন হোসেন রিমির হাতে। তবে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন নিয়েছেন আলম আহমেদ।

গাজীপুর-৫

গাজীপুর-৫ আসনে নৌকার টিকিট চেয়েছিল আটজন। মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি।

মনোনয়ন চাওয়া অন্যরা হলেন—গাজীপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুউজ্জামান, অ্যাড. আশরাফী মেহেদী হাসান, মো. রফিজ উদ্দিন, আব্দুল গণি ভূঁইয়া, প্রয়াত চিত্রনায়ক মো. ফারুকের পুত্র রওশন হোসেন শরৎ, মো. মোর্শেদ মোল্লা, গাজীপুর যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক শর্মিলী দাস মিলি।

এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুউজ্জামান।

তিনি বলেন, ‘আমি এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলাম। পরপর তিনবার মনোনয়ন চেয়েও পাইনি। এরপরও আমি বিদ্রোহী হইনি। এবার যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন একাধিক প্রার্থীর সুযোগ রয়েছে, তাই দলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করার জন্য আমি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।’

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.