Business is booming.
শীর্ষ সংবাদ
বাংলাদেশ জুয়েলারী সমিতির অকার্যকর কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগের দাবিকুমিল্লায় বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জনবন্যা পরিস্থিতি উন্নতির সম্ভাবনাঢাকার বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীরা, শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাতা ও ক্যাপ বিতরন করলো রিয়েল ক্যাপিটা গ্রুপ।১ লাখ সিমধারী ঢাকায় প্রবেশ করেছিল ঃজুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীগণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল ‘শ্রীলঙ্কা স্টাইলে’কারফিউ না দিলেবিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে : কাদেরলজ্জা হয় না নিজেদের রাজাকার বলতে : প্রধানমন্ত্রীঅবরোধ শিক্ষার্থীদের রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ঃ কোটা আন্দোলনবিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ওপরে কুড়িগ্রামে ২০ স্থানে ভাঙন, ব্রহ্মপুত্রের পানি

মানি লন্ডারিং: সর্বোচ্চ শাস্তি যা হতে পারে, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ

11

প্রতারণার মাধ্যমে গ্রামীণ টেলিকমের টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ড. ইউনূসসহ অন্যদের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। আইন অনুযায়ী যেসব ধারায় অভিযোগ রয়েছে, সেই হিসেবে সর্বোচ্চ এই সাজার বিধান রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল।

আজ বুধবার  ঢাকার বিশেষ জজ আদালত চায়ের বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (পিপি) মোশারফ হোসেন কাজল আজকের পত্রিকাকে জানান, ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/ ১০৯ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। তাই অভিযোগ প্রমাণ হলে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে ড. ইউনূস ও অন্যদের। অন্যান্য ধারায়ও যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির বিধান রয়েছে।

দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় যদি কোনো ব্যক্তি কোনো সম্পত্তির জিম্মাদার হয়ে বা ওই সম্পত্তির পরিচালনার ভারপ্রাপ্ত হয়ে সেই সম্পত্তি সম্পর্কে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করে, তবে ওই ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে অথবা ১০ বছর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অর্থ দণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারার অভিযোগের সঙ্গে দণ্ডবিধির ৪২০ (প্রতারণা), ৪৬৭ ধারা (মূল্যবান দলিল প্রণয়ন করে অর্থ গ্রহণের ক্ষমতা জাল করা), ৪৬৮ (প্রতারণার জন্য জালিয়াতি), ৪৭১ (জাল বলে জেনে জাল দলিলকে প্রকৃত দলিল হিসাবে ব্যবহার করা) ও ১০৯ (অপরাধে সহায়তা করা) ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

৪২০ ধারায় সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড, ৪৬৭ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৪৬৮ ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড, ৪৭১ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

এ ছাড়াও আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং আইনের ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ৪ (২) ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ১২ বছরের কারাদণ্ড ও ৪ (৩) ধারায় দণ্ডিত ব্যক্তির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়ার বিধান রয়েছে।

এই মামলার অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা হলো— গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলামসহ গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সদস্যদের উপস্থিতিতে ২০২২ সালের ৯ মে গ্রামীণ টেলিকমের ১০৮ তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখা একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়।

এর আগে ২৭ এপ্রিল কর্মচারীদের পাওনা লভ্যাংশ বিতরণের জন্য গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক ইউনিয়ন ও গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট চুক্তি সই হয়।

দুদক বলছে, গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সভায় ব্যাংক হিসাব খোলার সিদ্ধান্তের একদিন আগেই ব্যাংক হিসাব খোলা হয় এবং সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট এপ্রিলে হলেও, অ্যাগ্রিমেন্টে ৮ মে খোলা ব্যাংক হিসাব দেখানো হয়, যা বাস্তবে অসম্ভব।

ওই বোর্ডসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক মিরপুর শাখা থেকে গ্রামীণ টেলিকমের ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ১০ মে ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা স্থানান্তর করা হয়। পরে ২২ জুন গ্রামীণ টেলিকমের ১০৯ তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অতিরিক্ত ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকা দেওয়ার অনুমোদন হয়।

ঢাকা ব্যাংক গুলশান শাখার অ্যাকাউন্ট থেকে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের ডাচ-বাংলা ব্যাংক লোকাল শাখার অ্যাকাউন্টে ১৭ মে ১০ কোটি টাকা, ২৫ মে ১৪ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৩৯১ টাকা এবং ৩০ মে ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকাসহ মোট ২৬ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা স্থানান্তর করা হয়।

কিন্তু কর্মচারীদের লভ্যাংশ বিতরণের আগেই তাদের প্রাপ্য অর্থ তাদের না জানিয়েই সিবিএ নেতা কামরুজ্জামানের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখার অ্যাকাউন্টে ২৫ মে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ২ জুন ৫০ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়।

গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা মাইনুল ইসলামের ডাচ-বাংলা ব্যাংক মিরপুর শাখার অ্যাকাউন্টে ২৬ মে ২ কোটি টাকা এবং ২ জুন ১ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়।

গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা ফিরোজ মাহমুদ হাসানের ডাচ-বাংলা ব্যাংক মিরপুর শাখার অ্যাকাউন্টে ২৬ মে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ২ জুন ৫০ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়। আইনজীবী মো. ইউসুফ আলীর কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ধানমন্ডি শাখার অ্যাকাউন্টে ৪ কোটি টাকা এবং সিটি ব্যাংক গুলশান শাখার অ্যাকাউন্টে ৫ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়।

আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গুলশান নর্থ শাখায় যৌথ অ্যাকাউন্টে ২৯ মে ৬ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়, যা তাদের প্রাপ্য ছিল না বলে অভিযোগে জানায় দুদক।

অভিযোগে আরও বলা হয়, মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ট্রেড ইউনিয়নের নেতা কামরুল ইসলামের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ২৯ মে চেকের মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ হিসেবে নেন। আত্মসাতের উদ্দেশ্যে স্থানান্তরিত বাকি ৭২ হাজার টাকা ডাচ-বাংলা ব্যাংকে ফ্রিজ করা আছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে প্রকৃতপক্ষে হস্তান্তরিত হয়েছে মাত্র ১ কোটি টাকা। বাকি ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বোর্ড সদস্যদের সহায়তায় গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা এবং আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টরা অসৎ উদ্দেশ্যে জাল-জালিয়াতির আশ্রয়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে অর্থ স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করেছেন।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.