Business is booming.

ডিআইজি হাবিবুর রহমানের উপহার পেয়ে সহস্রাধিক যৌনকর্মী, হিজড়া ও বেদে সম্প্রদায়ের মানুষের ঘরে ঈদ আনন্দ

148
২৪ জুলাই / ২০২১/ একুশে নিউজ
বিশেষ প্রতিনিধি : শাহজাদ শাদ মান্না

সমাজের অবহেলিত সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে আবারো এগিয়ে এলেন মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি জনাব হাবিবুর রহমান, বিপিএম(বার), পিপিএম(বার), করোনাকালিন এই বৈশ্বিক দুর্যোগের সময় শৃঙ্খলা ও সাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপনের জন্য উপহারের ব্যবস্থা করে দিলেন সাভার, ঝিনাইদহ, মানিকগঞ্জ, পটুয়াখালী, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী দৌলতদিয়ার বেদে, হিজড়া ও যৌনপল্লীর সহস্রাধিক বাসিন্দাদের এর মধ্যে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ৪৫০টি বেদে পরিবার, মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বেদে গোত্রের উপসম্প্রদায় সান্দারপাড়ার ৫০টি পরিবারের জন্য কোরবানির পশু ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

পটুয়াখালী জেলার রাঙাবালী থানার চরমন্তাজের অসহায় বেদে পরিবারের জন্য পাঠিয়েছেন ঈদ উপহার। সাভারে বেদে ও হিজড়াদের জন্য পাঠিয়েছেন কোরবানির গরু উপহার। এছাড়াও দৌলতদিয়া পতিতাপল্লিতে ১ হাজার ৩০০ জনের জন্য ১৪ মণ ওজনের দুটি ও ৯ মণ ওজনের একটি গরু উপহার হিসেবে দিয়েছেন। ঈদের দিনে হঠাৎ করে এমন মাংস পেয়ে আনন্দিত যৌনকর্মীরা জানান, দৌলতদিয়ার এসব পরিবার এ নিয়ে দুবার কোরবানির মাংস পেয়েছে। এর আগে এভাবে কখনোই তাঁদের হাতে মাংস দেওয়া হয়নি। করোনা ও বন্যার ভয়াবহতার মধ্যে যখন এখানকার বাসিন্দারা অসহায়, তখন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান মাংস বিতরণ করে এখানকার অনেক পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন।

এই  প্রসঙ্গে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান বলেন, উত্তরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান স্যার দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে বসবাসরত ১৫০০ পরিবারের মাঝে এক কেজি করে কোরবানির মাংস উপহার দিয়েছেন। এখানকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে ফিরিয়ে আনতে এবং তারা যেন আনন্দ-উচ্ছ্বাসে থাকতে পারে এ জন্য স্যারের এ আয়োজন। উৎসব পালনে গোপালগঞ্জের হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য পাঠিয়েছেন ঈদ সামগ্রী। মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ডিআইজি হাবিবুর রহমান, বিপিএম(বার), পিপিএম(বার), এর এই ধরনের বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের ফলে একদিকে যেমন পিছিয়ে থাকা অবহেলিত সমাজ ও জনগোষ্ঠীর মানুষেরা উপকৃত হচ্ছে ঠিক তেমনি তাদের সামাজিক অবস্থানে এসেছে ব্যপক পরিবর্তন। পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি একক প্রচেষ্টায় তিনি বেদে সম্প্রদায় ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে এবং সামাজিক মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুরের হাট বাসুদেবপুর গ্রামে সান্দার বেদে গোত্রের প্রায় ২০০টি পরিবার স্থায়ীভাবে বসবাস করে, যারা শতভাগ মুসলিম ধর্মাবলম্বী হলেও এই জনগোষ্ঠীর কেউ মারা গেলে কেবল মাত্র পেশাগত ও সামাজিক অবস্থানের কারনে মুসলমান ধর্মীয় রীতিতে তাদের সৎকারটুকুও করতে পারত না।

পরিবারের কোনো সদস্য মারা গেলে আশপাশের কবরস্থানগুলোতে তাদের কবর দিতে দেওয়া হতো না। ডিআইজি হাবিবুর রহমান সম্পূর্ণ তার ব্যক্তি উদ্যোগে ও সহকর্মীদের সহযোগিতায় একটি জায়গা খুঁজে ব্যবস্থা করে নিজস্ব ব্যাক্তিগত অর্থে জমিটুকু কিনে নেন এবং পরে তা এই জনগোষ্ঠীর ২০০ পরিবারের সৎকারের জন্য দান করে দেন। ইতিপূর্বে ডিআইজি হাবিবুর রহমানের প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিনের বৈষম্য ভেঙ্গে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার যৌনপল্লীর একজন যৌনকর্মীর মৃত্যুর পর পুরোপুরি ইসলামি প্রথা অনুযায়ী জানাজা পড়িয়ে দাফন করার ব্যবস্থা করা হয়। যা তাকে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে দেশ জুড়ে প্রশংসিত করেছে কিন্তু প্রচারবিমুখ এই মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা ডিআইজি হাবিবুর রহমান পেশাগত দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অনেকটা নীরবে নিভৃতে ব্যাক্তি উদ্যোগে এ সকল সামাজিক জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ড প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচ্ছেন।

একুশে নিউজ / এন আর / ২০২১

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.