সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
শুষ্ক মৌসুম শুরু না হতেই পানি শুকিয়ে বিশাল বালুর চর জেগে উঠেছে। প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জেগে ওঠা এই বালুর চরের কারণে গত ৩ মাস ধরে এ নৌরুটে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পণ্য পরিবহনে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের ঘোড়ার গাড়িই এখন একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদীর বানতিয়ার-মনাকোষা নৌরুট এলাকবার বয়স্ক মানুষজন ও স্কুলগামী কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে পাড় হতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তি ও কষ্ট এখন চরমে। প্রখর রোদে উত্তপ্ত বালুর চর পাড় হয়ে অনেক শিক্ষার্থী ঠিকমত স্কুলে যায় না। ফলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে।
অপরদিকে উপজেলার সোনাতনি, কৈজুরি, গালা, খুকনি ও জালালপুর এ ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত যমুনা নদীর পানি শুকিয়ে ধূ ধূ বালুর চর জেগে ওঠেছে।
এ বিষয়ে স্থানূয়রা বলেন, যমুনা নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে শুকিয়ে যাওয়ায় নদীতে আর আগের মত মাছ নেই। ফলে আমরা বেকার জীবন যাপন করছি। করোনার পর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন স্ত্রী সন্তান নিয়ে জীবন চালানো খুব কষ্ট হয়ে গেছে।
বানতিয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমী খাতুন ইসলাম বলেন, পানি শুকিয়ে বালুর চর পড়ায় নদীতে আর নৌকা চলে না। ফলে আমাদের প্রতিদিন হাঁটু পানি ভেঙে ও ২ কিলোমিটার রোদে উত্তপ্ত বালুর চর মাড়িয়ে স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। তাই প্রায়ই স্কুলে যাওয়া হয় না। এতে আমাদের পড়ালেখা বিঘ্নিত হচ্ছে।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন বলেন, মেগা প্রকল্পের আওতায় অচিরেই আরিচা থেকে চিলমারীবন্দর পর্যন্ত যমুনা নদীর অনেক স্থানে ড্রেজিং কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমাদের এ অংশেও ড্রেজিং হয়ে যাবে। তখন আর এ সমস্যা থাকবে না।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ডেল্টা প্রকল্পের আওতায় একটি মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীরবন্দর সচল করতে আরিচা থেকে চিলমারীরবন্দর পর্যন্ত যমুনা নদীর ড্রেজিং কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমাদের এ অংশের শাখা নদীসহ সম্পূর্ণটাই ড্রেজিং হয়ে যাবে। তখন এ এলাকার নাব্যতা সংকট দূর হওয়ার পাশাপাশি আবাদি জমি ও বাড়িঘর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.