Business is booming.

১৫ আগষ্ট, অন্ধকার পথে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ

আমি মেজর ডালিম বলছি, শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে’—১৫ আগস্ট সকালে রেডিও থেকে এ ঘোষণা সারা দেশে ত্রাস ছড়িয়ে দেয়। দেশে ভয়ংকর কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে এমন খবর অনেক আগে থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ঘোষণায় তাই সারা দেশের মানুষের মনে অজানা ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের মনে আতঙ্ক এতটাই তীব্র ছিল যে, দেশের কোথাও কোনো প্রতিরোধ গড়ে উঠতে দেখা যায়নি। হত্যাকারীরা খুব সহজেই দেশের নিয়ন্ত্রণভার নিজেদের হাতে তুলে নেয়। এমনকি সামরিক বাহিনী ও রক্ষীবাহিনীর দিক থেকেও কোনো প্রতিরোধ দেখা যায়নি। সবাই নিষ্ক্রিয়, আতঙ্কিত হয়ে স্থবির হয়ে পড়েছিল যেন। সারা দিন রেডিওতে একের পর এক ঘোষণা চলছিল।

27

০৮ আগস্ট, ২০২১ 

 

মেঘনার স্রোতে একাকার: পুরুষোত্তম শেখ মুজিব ও সুফি বায়েজিদ বোস্তামি (রহ.)

১৫ আগস্ট ভোর সাড়ে ৪টায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের উত্তর প্রান্ত থেকে যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞের অভিযান শুরু হয়েছিল, বিকাল সাড়ে ৪টার মধ্যেই সেই অভিযানের মূল লক্ষ্য অর্জন করে ফেলেছিল চক্রান্তকারীরা। সন্ধ্যা নামার আগেই বাংলাদেশের নতুন পরিচয়, নতুন রাষ্ট্রপতি, নতুন মন্ত্রিসভা ও নতুন প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল খন্দকার মোশতাক, রশীদ ও ফারুকেরা। বাইরে কারফিউ চলছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের প্রায় সব সদস্যকে হত্যা করে খন্দকার মোশতাক রাষ্ট্রপতির প্রথম ভাষণে বললেন, ‘সকলের প্রতি বন্ধুত্ব এবং কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়’—এই নীতির রূপরেখার মধ্যে আমরা শান্তি ও প্রগতির পথে আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখব।’ বক্তৃতা শেষে বললেন, ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।’


মেঘনার স্রোতে একাকার: পুরুষোত্তম শেখ মুজিব ও সুফি বায়েজিদ বোস্তামি (রহ.)

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এক অন্ধকার পথে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের পরিবর্তে খন্দকার মোশতাকের ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ ঘোষণার মধ্য দিয়ে সেই অন্ধকার যাত্রার দিকনির্দেশনা পায় বাংলাদেশের মানুষ।


মেঘনার স্রোতে একাকার: পুরুষোত্তম শেখ মুজিব ও সুফি বায়েজিদ বোস্তামি (রহ.)

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক নীরদ সি চৌধুরী বাঙালিদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে তারা বিশ্বের মানুষের কাছে নিজেদের আত্মঘাতী চরিত্রই তুলে ধরেছে। দ্য টাইমস অব লন্ডনের ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়, ‘সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সব সময় স্মরণ করা হবে। কারণ তাকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোনো অস্তিত্ব নেই। একই দিন লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের মানুষ শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকাণ্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করবে।’

সুত্র : ইত্তেফাক

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.