Business is booming.

শিশুর জন্ম হলেই উপহার ও মিষ্টি নিয়ে হাজির ইউএনও

22

নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

উপজেলার কোনো দম্পতির পরিবারে নবজাতকের আগমনের খবর পেলেই উপহার ও মিষ্টি নিয়ে হাজির হন তিনি। নবজাতককে কোলে নিয়ে উপজেলার নাগরিক (সিটিজেন) হিসেবে বরণ করে নেন। আর নবজাতকের মা-বাবাকে মিষ্টি খাইয়ে উপহারের প্যাকেট হাতে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। একই সঙ্গে পৌঁছে দেন নবজাতকের জন্মসনদ। তিনি হলেন ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল হক।

এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে তিনি ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচি শুরু করেছেন।

এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) প্রথমদিনে নগরকান্দা পৌরসভা এলাকার নগরকান্দা গ্রামের মোঃ মানিক মিয়া ও সোনিয়া আক্তার দম্পতির ঘরে কন্যা সন্তান জন্মের তথ্য পান তিনি। এরপর নবজাতকের জন্য উপহার সামগ্রী, মিষ্টি ও তাৎক্ষণিকভাবে জন্ম নিবন্ধন করতে সংশ্লিষ্টদের সাথে নিয়ে ওই দম্পতির বাড়িতে হাজির হন তিনি।

ইউএনওর এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সঠিক বয়সে সব নবজাতকের জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করতে সকলকে উদ্বুদ্ধ করা।

জানা গেছে, কোনো শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে বিনা ফিতে স্থানীয় পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধনে সরকারি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এ উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে শিশুর জন্ম নিবন্ধনে আগ্রহ তুলনামূলক কম। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রয়োজনে মা-বাবারা সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করিয়ে সনদ নেওয়ার জন্য ছুটাছুটি করেন বিভিন্ন ইউপি কার্যালয়ে। ততদিনে শিশুর বয়স পাঁচ-ছয় বছর হয়ে যায়। তখন নানা কারণে উক্ত এলাকার চেয়ারম্যানদের অনুমাননির্ভর তারিখে হলেও নিবন্ধন করে সনদ দিতে হয়।

আর যেসব শিশুরা স্কুল-মাদ্রাসায় ভর্তি হতো না, তারা থেকে যেত জন্ম নিবন্ধনের বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে ইউএনও মোঃ মঈনুল হক উপজেলা ব্যাপী এ ব্যতিক্রমী কর্মসূচি শুরু করেন। তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ইউএনওর এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের প্রশংসা করে পৌরসভার নগরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ মানিক মিয়া বলেন, “আমার প্রথম কন্যাসন্তানের আগমনের খবর পেয়ে ইউএনও স্যার উপহার ও মিষ্টি হাতে আমার বাড়িতে হাজির হন। সাথে সাথে আমার সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের সনদ ও করে দিয়ে গেছেন। আমরা ইউএনও স্যারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।”

উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের শলিথা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ হাফিজুর মাতুব্বর বলেন বলেন, ‘আগে জন্ম নিবন্ধন করতে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে অনেক ঘুরাঘুরি করতে হতো, আজ সকালে আমাদের চমকে দিয়ে ইউএনও স্যার নিজে বাড়িতে মিষ্টি ও উপহার নিয়ে হাজির হন ও আমার বাচ্চার জন্ম নিবন্ধন সনদ করে দেন। স্যারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সঠিক সময়ে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করতে পেরে আমরা খুব খুশি।’

ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের উদ্যোক্তা নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল হক বলেন, কোনো শিশু যাতে ভুল জন্মতারিখ নিয়ে বেড়ে না ওঠে, নিবন্ধনের বাইরে না থাকে এবং একই ব্যক্তির একাধিক সনদ রোধে আমাদের এ কর্মসূচি আগামীদিনে অব্যাহত থাকবে।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.